আন্তর্জাতিক

ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

ইতালির প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন উগ্র ডানপন্থী নেতা জর্জিয়া মেলোনি। ইতালির প্রথম নারী সরকার প্রধান হলেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথও নিয়েছেন দেশটির কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিক মেলোনি। শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে চলতি শতকের ১২তম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির ৬৮তম সরকারের প্রধান হলেন ৪৫ বছর বয়সী মেলোনি।

বেনিতো মুসোলিনের পর প্রথম পোস্ট-ফ্যাসিস্ট ‘ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টি’ ২৫ সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। তবে সরকার গঠনের জন্য দলের বাইরের জোটের সমর্থনের প্রয়োজন ছিল। ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টি ইউরোসেপ্টিক এবং অ্যান্টি-ইমিগ্রেশন বা অভিবাসন বিরোধী।

মেলোনির নিয়োগ ইউরোজোনের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ দল আগে কখনো সরকারে ছিল না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম ঘোষণার সাথে সাথেই রোম থেকে মেলোনি তার মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেছেন।

গত মাসে ২৬ শতাংশ ভোট জিতেছে মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি পার্টি। যেখানে তার মিত্র ফোরজা ইতালিয়া এবং অতি-ডানপন্থী লীগ যথাক্রমে আট এবং নয় শতাংশ ভোট পেয়েছে।

তিনি ছয় নারীসহ তার ২৪ জন মন্ত্রীর তালিকা প্রকাশ করেছেন। ইতালির অংশীদারদের আশ্বস্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে জিয়ানকার্লো জিওরগেত্তির নাম ঘোষণা করেছেন তিনি। যিনি মারিও দ্রাাঘির আগের সরকারের অধীনে কাজ করেছিলেন।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাবেক মন্ত্রী জিওরগেত্তিকে মাত্তিও সালভিনির লিগের আরও চড়া মধ্যপন্থী এবং ইউরোপ পন্থী সদস্যদের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। মেলোনি ফোরজা ইতালিয়ার সাবেক ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট তাজানিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও নির্বাচিত করেছেন। সালভিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

২০১৮ ও ২০১৯ সালের সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন সালভিনি। ফেরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে এবার হতে না পারায় হতাশ তিনি।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতৃত্ব দেওয়ার আগে রোববার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দ্রাঘির থেকে মেলোনির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ইউক্রেনের প্রতি মেলোনির প্রবল সমর্থন নিয়ে তার দুই জোটের অংশীদারদের সাথে মতোবিরোধের কারণে জোটবদ্ধ সরকার গঠনের জন্য ছায়া পড়েছিল। ফোরজা ইতালিয়া এবং লীগের নেতারা উভয়কেই মস্কোর কাছাকাছি বলে মনে করা হয়।

ফোরজা ইতালিয়ার প্রধান, ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির একটি রেকর্ডিং ফাঁস হয়েছিল। যিনি মস্কোর সাথে তার উষ্ণ সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দোষারোপ করেছেন৷

মেলোনির ইউরোসেপ্টিকে থাকার পরেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবশিষ্ট অংশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইউক্রেনের প্রতি তার সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় ছিলেন।

Related Articles